মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর কী করা উচিত? Best Career Path after 10th and 12th

Best Career Path after 10th and 12th

জীবনের কঠিন সময় মাধ্যমিক (Madhyamik) এবং উচ্চমাধ্যমিক (Uchha-Madhyamik)। শিক্ষাজীবন প্রথম শ্রেণী থেকে চলতেই থাকে, তারপরই দশম শ্রেণী অর্থাৎ মাধ্যমিকের পর বিভক্ত হয়ে যায়। কে কোন দিকে যাবে। কেউ পড়াশোনা নিয়েই এগোয়, আবার কেউ কারিগরি শিক্ষা নিয়েই এগোয়। মাধ্যমিকের পর কেউ নেয় সায়েন্স, কেউ নেয় আর্টস, কেউ আবার কমার্স। মাধ্যমিকের পরেই আসে উচ্চমাধ্যমিক। উচ্চমাধ্যমিকের পর কেউ কলেজে ভর্তি হয় আবার কেউ তাড়াতাড়ি চাকরি লাভের জন্য অনান্য কোর্সে ভর্তি হয়। অনেক ছাত্র -ছাত্রীই ঠিক করতে পারে না, কোনটা তার জীবনে ঠিক। আসুন আজ সেই নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব।

মাধ্যমিক (Madhyamik)

জীবনের প্রথম পরীক্ষা মাধ্যমিক। এই পথে পাড়ি দিতে হয় সকলকেই। সকলেই কঠোর পরিশ্রম করে এই পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য। কিন্তু পথ পাড়ি দেওয়ার পর কি করব? এই প্রশ্নের উত্তর অনেকের কাছেই থাকে আবার অনেকের কাছেই থাকে না। অনেক ছাত্র ছাত্রী আছে, পরিবারের ইচ্ছা মেনে আর্টস, কমার্স, সায়েন্স নেয়। কিন্তু সঠিক পথটি কী? আসুন জেনে নিই। 

মাধ্যমিকের পর কী করা উচিত?

যারা খুব ভালো স্টুডেন্ট হয়, তাদের অভিভাবকরা চান সায়েন্স নিক। সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করুক। আবার যারা গতানুগতিক স্টুডেন্ট তারা আবার আর্টস নেন, আবার যারা মধ্যবর্তী তারা কমার্স নেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা গেছে সায়েন্স নেওয়াটা যতটা সম্মানের ততটাই কষ্টের। আর তাই দেখা যায়, উচ্চমাধ্যমিকে কোনোরকমে পাশ করেছে, কিংবা কোনোরকমে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে আর্টস বিষয়ে অনার্স নিচ্ছে, বাংলা বা ইংরেজি। তবে এখানে একটা কথা বলব, সায়েন্স, আর্টস বা কমার্স যে বিষয়ই নিয়ে পড়াশোনা করো না কেন, আগে নিজের মনের শক্তি কতটুকু আছে সেটা দেখা উচিত। পরিবারের মন রাখতে বিষয় নির্বাচন না করে, নিজের মনের কথাকে গুরুত্ব দিয়ে বিষয় নির্বাচন করা উচিত। 

১) সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করে লাভ কী?

সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করলে আপনি হতে পারবেন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইটি রিসার্চার, মার্চেন্ট নেভি, ফরেনসিক সায়েন্স, এথিক্যাল হ্যাকিং । কারোর যদি জীবনের লক্ষ্য থাকে এইসব হওয়ার, তাহলে উচিত সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করার। সায়েন্স শাখা দুভাগে বিভক্ত। PCB (মেডিক্যাল)PCM (নন-মেডিক্যাল)। 

PCB (মেডিক্যাল)

PCB (মেডিক্যাল) হল Physics, Chemistry, Biology, (English) । যাদের অঙ্ক বিষয়টা কঠিন লাগে তারা এই বিষয়টি নির্বাচন করেন।

এই শাখার কেরিয়ার

  • ডাক্তার (MBBS)
  • ডেন্টিস্ট (BDS)
  • আয়ুর্বেদ (BAMS)
  • হোমিওপ্যাথি (BHMS)
  • ফিজিওথেরাপিস্ট (BPT)
  • ভেটেরিনারি সায়েন্স (BVSC)
  • বায়ো-টেকনোলজি 
  • হর্টিকালচার 
  • মেডিসিন 
  • ফুড টেকনোলজি 

PCM (নন-মেডিক্যাল)

যারা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে চান, যারা অঙ্ক আর ইংরেজিতে পারদর্শী, তারা এই বিষয়টি নির্বাচন করতে পারেন। 

এই শাখার কেরিয়ার

  • ইঞ্জিনিয়ারিং (B.Tech/ BE)
  • আর্কিটেকচার (B.Atch)
  • কম্পিউটার এপ্লিকেশন (BCA)
  • মার্চেন্ট নেভি/ Deffence (NDA/ CDS) 
  • কমার্শিয়াল পাইলট 
  • এগ্রিকালচার (B.sc)
  • ম্যাথমেটিক্স (B.sc)
  • কেমিস্ট্রি (B.sc)
  • ফিজিক্স (B.sc)

২) আর্টস নিয়ে পড়াশোনা করে লাভ কী?

সাধারণত যেটা শোনা যায় যারা খুবই ভয় পায় অঙ্ককে, জীবন থেকে বাদ দিতে চায় এই বিষয়টিকে। এবং যারা নাকি পড়াশোনায় ফাঁকিবাজ তারা এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে। তবে এই জনশ্রুতি ভুল। কারণ আর্টস নিয়ে পড়লে অনেক বেশি নাম্বার ওঠে। যারা সরকারি চাকরি খোঁজেন তাদের জন্য এই বিভাগ একেবারেই উপযোগী। যারা শিক্ষক হতে চান কিংবা সাংবাদিক তাদের জন্য এই শাখা একেবারেই উপযোগী।

কি কি বিষয় নিয়ে পড়তে হয়?

  • ইতিহাস
  • রাষ্ট্রবিজ্ঞান
  • সমাজবিজ্ঞান
  • অর্থনীতি
  • ভূগোল
  • মনোবিজ্ঞান
  • ইংরেজি
  • আঞ্চলিক ভাষা
  • এডুকেশন
  • দর্শন 
  • সংষ্কৃত 
  • হোম সাইন্স 
  • পরিবেশ 

এই শাখার কেরিয়ার

  • সাংবাদিক
  • গ্রাফিক ডিজাইনার 
  • আইনজীবী
  • ইভেন্ট ম্যানেজার
  • শিক্ষক
  • অ্যানিমেটর
  • প্রফেসর 
  • সিভিল সার্ভিস 
  • পুলিশ 
  • ইন্সপেক্টর 
  • ডিফেন্স ইত্যাদি। 

৩) কমার্স নিয়ে পড়াশোনা করে লাভ কী?

বিজ্ঞান শাখার পরেই রয়েছে এই শাখা। যারা পড়াশোনাতে খুব খারাপ নয়, কিংবা খুব ভালো নয়, তারা এটা নিয়ে পড়াশোনা করে। এই বাক্যটি জনমুখে শোনা যায়। কিন্তু আদৌও সঠিক নয়। কেউ যদি ব্যবসায়ী হতে চান, অ্যাকাউন্টেন্ট হতে চান, তাহলে এই শাখায় পড়াশোনা করতে পারেন। 

কমার্সে কি কি বিষয় রয়েছে?

  • অ্যাকাউন্টান্সি
  • বিজনেস স্টাডিজ 
  • অর্থনীতি
  • ইংরেজি
  • তথ্য অনুশীলন / গণিত। 

এই শাখার কেরিয়ার

  • অ্যাকাউন্টেন্ট
  • কোম্পানি সেক্রেটারি 
  • এমবিএ
  • আর্থিক পরিকল্পক
  • ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং
  • চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (CA)। 

খুব তাড়াতাড়ি চাকরি পাওয়ার জন্য অনেকেই মাধ্যমিকের পর উচ্চমাধ্যমিক না দিয়েই চাকরি মূলক কোর্স করেন। 

৪) পলিটেকনিক কোর্স

এটি একটি টেকনিক্যাল কোর্স । এই কোর্সের মেয়াদ ৩ বছর। এই কোর্স শেষে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর তাই অনেকেই এই কোর্স করে থাকেন। 

এখানে কী কী কোর্স করানো হয়?

  • Diploma In Civil Engineering
  • Diploma In Computer Engineering
  • Diploma In Mechanical Engineering
  • Diploma In Automobile Engineering
  • Diploma In Mechanical Engineering

৫) আইটিআই কোর্স

রেলের লোকো পাইলট বা অন্যান্য টেকনিক্যাল পদে চাকরি করার ইচ্ছে থাকলে এই কোর্স করতে পারে। এই কোর্সের সময় কাল ১-৩ বছর।

আইটিআই শাখায় যে যে কোর্স করানো হয়

  • পাম্প অপারেটর - ১ বছর। 
  • ফিটার ইঞ্জিনিয়ারিং - ২ বছর। 
  • টুল অ্যান্ড ডাই মেকার ইঞ্জিনিয়ারিং - ৩ বছর। 
  • ম্যানুফ্যাকচার ফুট ওয়্যার - ১ বছর। 
  • রেফ্রিজারেশন ইঞ্জিনিয়ারিং - ১ বছর। 
  • ফল ও সবজি প্রক্রিয়াকরণ - ১ বছর। 
  • ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং - ১ বছর। 

৬) প্যারামেডিক্যাল কোর্স

যাদের ইচ্ছা স্বাস্থ্যসেবা সেক্টরে কাজ করার, কিন্তু NEET এর যোগ্যতা নেই, তারা এই কোর্স করতে পারে। এই কোর্সের সময়কাল 3 মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত। 

কী কী কোর্স করানো হয়?

  • মেডিকেল ল্যাব টেকনোলজি - ৬-১২ মাস। 
  • এক্স-রে প্রযুক্তিতে ডিপ্লোমা - ২ বছর। 
  • এমআরআই টেকনিশিয়ান - ৩-১২ মাস। 
  • ডায়ালাইসিস টেকনিক - ২ বছর। 
  • ইসিজি ডিপ্লোমা - 2 বছর। 
  • মেডিকেল টেকনোলজি ডিপ্লোমা - 2 বছর। 
  • ডিপ্লোমা ইন রুরাল হেলথ কেয়ার - ১ বছর। 
  • ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কেয়ার সহকারী-১-২ বছর। 

এছাড়াও রয়েছে কিছু কোর্স

  • পোল্ট্রি ফার্মিং এর সার্টিফিকেট
  • গ্রাফিক ডিজাইনিং
  • ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট
  • এসইও বিশ্লেষক
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • সাইবার সিকিউরিটি 
  • হোটেল ম্যানেজমেন্ট
  • এমএস অফিসে সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম। 

কোর্স না করেও মাধ্যমিক পাশ করেই চাকরির সুযোগ মিলতে পারে, যেমন - 

  • গ্রামীণ ডাক সেবক
  • ভারতীয় সেনাবাহিনী
  • ভারতীয় নৌবাহিনী
  • ভারতীয় বিমান বাহিনী
  • বিএসএফ
  • ভারতীয় রেলওয়ে
  • গ্রুপ সি ও ডি

উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কী করা উচিত?

এবার আসা যাক উচ্চমাধ্যমিক পার করে কী করা উচিত? কেউ উচ্চশিক্ষার জন্য বেছে নেয় কলেজ জীবন, কেউ আবার ডিগ্রি অর্জন করার জন্য বেছে নেয় কলেজ জীবন। আসুন জেনে নিই কোনটা সঠিক। সবার প্রধান লক্ষ্য চাকরি। আর তাই আসুন জেনে নিই সেই পথের দিকে কীভাবে পাড়ি দেওয়া যায়।

১) বি. এ ডিগ্রী (BA) 

তিন বছরের কোর্স রয়েছে। যে কোনো শাখা নিয়ে এখানে পড়াশোনা করতে পারবেন। তবে একটি বিষয় নির্বাচন করতে হবে। যেমন ধরুন বাংলা, ইংরাজি আরও যেসব বিষয় আছে। যে কোনো একটা নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন । 

  • এই ডিগ্রি অর্জন করে বি.এড (B.ED) কোর্স করতে পারেন। যা আপনাকে শিক্ষক হওয়ার দিকে অগ্রসর করায়।
  • আবার এই ডিগ্রি অর্জন করে মাস্টার্স করে নেট সেট পরীক্ষা দিয়ে গবেষণার কাজে বা প্রফেসর হওয়ার দিকে এগোতে সাহায্য করে।

২) ব্যাচেলর অব ফাইন আর্টস (BFA) চারুকলায় স্নাতক

কেউ যদি গান,  আঁকা, নাচ বা নাটকের মতো বিষয়ে আগ্রহী হন, তাহলে এই শাখায় পড়াশোনা করে রোজগার করতে পারবে।

কোথায় কোথায় পড়ানো হয়?

  1. বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়য়, কলা ভবন
  2. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। 
  3. রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাস। 
  4. গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট।

৩) জার্নালিজম ও মাস-কমিউনিকেশন (Journalism & Mass Communication)

কারোর যদি ইচ্ছা থাকে সাংবাদিক হওয়ার, কিংবা ফিল্ম, আধুনিক প্রযুক্তির উপর কাজ করার তাহলে এই শাখায় পড়াশোনা করতে পারেন। 

কোথায় কোথায় রয়েছে এর প্রতিষ্ঠান?

  1. ইন্সটিটিউট অব মাস কমিউনিকেশন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন স্টাডিজ। 
  2. যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। 
  3. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। 
  4. ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি। 

৪) ফ্যাশন ডিজাইনিং (Fashion Designing)

যারা ফ্যাশন নিয়ে নাড়াচাড়া করেন তাদের জন্য উপযুক্ত এই ফ্যাশন ডিজাইনিং। টেক্সটাইল, প্যাটার্ন মেকিং, ফ্যাশন স্টাডিজ, ডিজাইনিং ম্যানেজমেন্ট এইসব শেখানো হয়। এটি চার বছরের কোর্স। 

কোথায় কোথায় রয়েছে প্রতিষ্ঠান

  1. শ্রীমতি টেকনো ইনস্টিটিউট। 
  2. গ্ল্যামার স্কুল অব ফ্যাশন অ্যান্ড ইন্টেরিয়র । 
  3. রিলায়ান্স এডুকেশন। 

৫) নার্সিং (Nursing)

যে কোনো  শাখায় উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। তিন থেকে চার বছরের কোর্স করতে হয় । নার্সিং এ স্নাতক ডিগ্রী করা যায়। কেউ চাইলে এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্স বা দু’ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সও করতে পারেন।

৬) ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট (Event Management)

বিয়েবাড়ি, কর্পোরেট পার্টি সবকিছু দক্ষ ভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন দক্ষ ছেলে মেয়েদের । আর তাই সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই কোর্স করানো হয়। কোর্সের মেয়াদ ১ থেকে ২ বছর। 

৭) ফটোগ্রাফি (Photography)

অনেকেরই শখ ফটোগ্রাফির। কিন্তু সুন্দর ফটোগ্রাফি করার জন্য চায় দক্ষ ফটোগ্রাফারের। তাই দক্ষ ফটোগ্রাফার তৈরীর জন্য রয়েছে ফটোগ্রাফির কোর্স। যার মেয়াদ ৬ মাস থেকে ২ বছর। এই কোর্স থাকলে যে কোনো অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফি করতে পারবেন, সংবাদমাধ্যমেও কাজের সুযোগ রয়েছে। 

৮) ফিজিওথেরাপিস্ট (Physiotherapist)

সাড়ে চার বছরের ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি (BPT) পাশ করে রয়েছে চাকরির সুযোগ। 

এছাড়াও সরকারি চাকরির জন্য পড়াশোনা করতে পারেন।

উচ্চমাধ্যমিক পাশে কি কি সরকারী চাকরি পাওয়া যায়?

  • SSC-CHSL
  • GDS (এটি মাধ্যমিকের রেজাল্টের ভিত্তিতে পাওয়া যায়)
  • রাজ্য পুলিশ কনস্টেবল
  • ভারতীয় সেনা 
  • ভারতীয় বিমানবাহিনী
  • ভারতীয় নৌবাহিনী
  • গ্রুপ সি, ডি ক্লার্ক
  • স্টেনোগ্রাফার গ্রেড সি ও ডি
  • ডাটা এন্ট্রি অপারেটর
  • জুনিয়র সেক্রেটারিয়েট অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • রেলওয়ে 
  • মাল্টি টাস্কিং স্টাফ
  • ইন্সপেক্টর 
  • জুনিয়র ক্লার্ক কাম টাইপিস্ট
  • সহকারী লোকো পাইলট
  • আদালত কেরানি

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url